Your Cart
:
Qty:
Qty:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস: কী খাবেন, কী খাবেন না?

ডায়াবেটিস - শুধু একটি রোগ নয়, এটি একটি আজীবন সঙ্গী, যার সঙ্গে বুঝে শুনে চললেই সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। ওষুধ খাওয়া, ইনসুলিন নেওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম - এসবের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস বা ডায়েট ঠিক রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি।
এই ব্লগে আমরা জানবো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কী খাওয়া উচিত, কী এড়ানো উচিত, এবং কীভাবে একটি সুষম ও কার্যকর খাদ্যতালিকা তৈরি করা যায়।
ডায়াবেটিস ও খাদ্য: সম্পর্ক কোথায়?
যেহেতু ডায়াবেটিস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের অসুবিধার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, তাই আমরা যা খাই, সেটাই আমাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণে সরাসরি প্রভাব ফেলে।
সঠিক খাবার সঠিক পরিমাণে খেলে -
১) রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে
২) ইনসুলিনের প্রভাব ভালো কাজ করে
৩) ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে
৪) অন্যান্য জটিলতাও এড়ানো যায়
আপনি যদি এখনো জানেন না ডায়াবেটিস কীভাবে হয় বা এর প্রকারভেদ কী কী, তাহলে এই পোস্ট দুটি আগে দেখে নিন:
ডায়াবেটিস কী? লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার এক নজরে
টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস: পার্থক্য ও চিকিৎসা পদ্ধতি
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যে খাবারগুলো উপকারী
নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দিলাম, যেগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের জন্য পুষ্টিকরও:
সবজি (সবুজ শাকসবজি)
করলা, পালং শাক, লাল শাক, ঢেঁড়স, বেগুন, মিষ্টিকুমড়ো
উচ্চ ফাইবারযুক্ত এবং গ্লুকোজ রিলিজ ধীরগতি সম্পন্ন
ফল (সীমিত পরিমাণে)
আপেল, পেয়ারা, জাম, স্ট্রবেরি, কমলা
উচ্চ ফাইবার এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ, তবে চিনি আছে বলে পরিমিত খেতে হবে
কার্বোহাইড্রেট (কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত)
লাল চাল, ওটস, বার্লি, শস্যজাতীয় খাবার
ধীরে হজম হয় বলে রক্তে শর্করার উপর তীব্র প্রভাব ফেলে না
প্রোটিন
ডিমের সাদা অংশ, গ্রিল করা মাছ, মুরগি (স্কিন ছাড়া), মসুর ডাল
ইনসুলিন রেসপন্সে সহায়ক ও পেট ভরায়
স্বাস্থ্যকর চর্বি
বাদাম, অলিভ অয়েল, চিয়া সিড, অ্যাভোকাডো
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে শর্করার ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে
পর্যাপ্ত পানি
প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি
ডিহাইড্রেশন এড়ানো ও গ্লুকোজ মেটাবলিজমে সহায়ক
যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু খাবার আছে যেগুলো হুট করে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এইসব খাবার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়:
মিষ্টি ও চিনি
মিষ্টান্ন, সফট ড্রিঙ্কস, মধু
রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বেড়ে যায়
রিফাইনড কার্বস
সাদা চাল, ময়দা, সাদা পাউরুটি
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি, হজমের পর খুব দ্রুত শর্করায় পরিণত হয়
প্রক্রিয়াজাত খাবার
প্যাকেট চিপস, ফাস্ট ফুড, প্রসেসড মিট
লুকানো চিনি ও সোডিয়াম বেশি থাকে
চর্বিযুক্ত খাবার
ভাজাভুজি, অতিরিক্ত তেল
ইনসুলিন রেজিস্টেন্স বাড়াতে পারে
বাস্তবিক কিছু পরামর্শ
১) খাবার একবারে বেশি না খেয়ে ছোট ছোট ভাগে খান
২) রুটিন করে খাবার খান
৩) একদিনের জন্য খাবার মিস না করুন
৪) রক্তে গ্লুকোজ মনিটর করুন
৫) ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্যতালিকা তৈরি করুন
উপসংহার
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস শুধু প্রয়োজন নয়, বরং এটি এক ধরনের লাইফস্টাইল চয়েস। আপনি ঠিকভাবে খেলে ও খানিকটা সচেতন থাকলে, ডায়াবেটিস থাকলেও আপনি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও উপভোগ্য জীবন কাটাতে পারেন।